আত্মবিলাশ -
Nasir Uddin Ahmed
Published on: ডিসেম্বর 11, 2020
আত্মবিলাশ
নাসির উদ্দিন আহমেদ
(কিছু বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে লেখা)
ছেলেটা বলছিল বয়েস কি চলে গেছে
চব্বিশ চলে সবে হয়ে কি গেছি বুড়া?
তবে কেন এত চাপ কেন এত তাড়াহুড়া?
আগে কিছু করে তবে দাড়িয়ে নিজের পায়ে
এর পরে দেখে শুনে খুঁজে দুই দশ গাঁয়ে
বিয়ে একটা করব থাকব আলিশানে।
হায় শেষে ঐ ছেলে টাকা তো পকেট ভরা
বিয়ে আর হয়না বয়েসটা বেশি তার
এখন আর বাজেনা যৌবনের সুর-তার।
জিনিয়া নাম তার চটপটে মেয়ে সে
স্কুল পেরিয়েই বদলায় মন আর –
ভাবে কোনদিন রবেনা কাহারো অধীনে
করে ফেলে মাস্টার্স আরো দূর যেতে চায়
ঝামেলা ছাড়াই চাকরিটাও পেয়ে যায়।
খোজে আরো স্বাধীনতা আটকায় তারে কে?
বেখেয়ালে দিন যায় প্রতিজ্ঞায় আটকে।
রাতুলটা বোকা ছিল আসছিল প্রেম নিয়ে
রেগে জিনিয়া বলেছিল মর তুই দূরে গিয়ে।
বেচারা করে ফেলে বিয়ে কষ্ট না মানিয়া
বউ নিয়ে সংসারি বাচ্চাটা হবে হবে
দেখে তারা খুব সুখী চেয়ে থাকে জিনিয়া।
শেষতক জিনিয়ার বিয়েটা আর হয়না
কারন সে পছন্দের কাউকেই পায় না।
অনুরাধার রং টা শ্যামলা তাতে কি
দেহের গড়ন যে মাথা ঘুরানোর মতো
তাই তো সে শর্ট ড্রেসে মাতায় ছেলে যতো।
এলাকায় এমন আর দ্বিতীয় যে নাই কেউ
পরেশের মাথা ঘুরে বুকে উঠে যায় ঢেউ
আগুপিছু না ভেবে গোলাপের আটি নিয়ে
সোজা গিয়ে দাড়িয়ে অনুরাধার সমুখে
“তুমি যে অষুধ আমার সমস্ত অসুখে”।
হাসি দিয়ে লুফে নেয় গোলাপের আটিটা
বলে তোর ভালবাসা একেবারে খাটিটা
পরেশ-অনুরাধা চলে দুই বছরে
হঠাৎ-ই টাকাওয়ালা আদিত্য গাঙ্গুলি
সমন্ধ নিয়ে হাজির অনুরাধা পরিবারে
টাকাটাই সব কিছু বুঝে যায় মেয়েটা
তড়িঘড়ি মালা দেয় আদিত্যের চিবুকে
কমজোর পরেশ টা খেয়ে নেয় বিষ টা
অবশেষে বেচে গেল ভাগ্যের কৃপাতে
মেয়েটা কাঁদবে ত দূরে করলোনা ইশ টা।
একদিন অনুরাধা পরিবারে ফিরে আসে
শোনা যায় পরকিয়ার অভিযোগে
পরিজন প্রতিবেশী ফিস ফিস আর হাসে।
নিজেরে ক্ষমা আর করতে না পেরে
গলায় রশি নিয়ে জীবন টা গেল হেরে
পরেশ টা শুনে আর পারল না সইতে
বোধ হারিয়ে পাগল এখন সে
কভু হাসে কভু কাঁদে এ ব্যথা রইতে।
সোহানার টিউটর থাকে খুব চুপচাপ
টেবিলের দুদিকে থাকলেও নিচ দিয়ে
সোহানার পা দুটো সোহান কে দেয় চাপ।
একবেলা দেখে তারে চোখ যে ভরেনা
তাই ফের বিকালে নোট লাগে বলে এই
অযুহাতে চলে আসে সন্ধ্যায়ও সরেনা।
লজ্জায় টিউটর চলে যায় ঘর থেকে
ঠোঁট বেঁকে ছাত্রীও ধ্বনিহীন গলা হেকে
প্রস্থান নেয় অপুর্ন সাধ রেখে।
বিধাতার পরিহাসে মিলেনা দুটি মন
অন্যের ঘরনী হয়ে যায় সোহানা
সুনামি হানা দেয় টিউটরের বক্ষে
জল ফেলে বোবা হয়ে অন্ধকার কক্ষে।
এখন বয়স এগার ছাত্রীর মেয়েটার
সোহানও সাংসারি বাবা সে ছেলেটার
ছাত্রীটা এখনো প্রতিদিন একবার
ফোন দেয় টিউটরে;ধরেনা এই ভেবে-
সংসারটা না ভেংগে যায় পাছে কবে।
দুই দিকে দুই জন কিন্তু মানেনা মন
দেহ দুটো হয়তো পরে থাকে দুদিকে
টেবিলে পড়ার স্মৃতি ভুলেনা কোন জন।
সুসমা একরোখা আর নিজ বুঝদার
বেচারা সোজা বর যেন ঘরে ঝাড়ুদার।
বউটা মনে করে শাসনেই মঙ্গল
আসলে কি ঠিক তা কখনোই বুঝেনা
লাঠির আগায় রাখে শুধু চোখ রাঙ্গানি।
ভালবাসা নাইতো শুধু কাটে শাসনে
কারনে অকারনে লাঞ্চনা অপমানে
জামাইটার চোখে পানি অথচ সে কাঁদেনা
প্রতিজ্ঞা মনে মনে যেন কভু হারেনা।
একদিন সুসমার কান্নায় একাকার বাড়ি ঘর
কি হল কি হল মুখে কথা আসে না
দ্বিতীয় বিয়ের কাজ এবার সেরে এসেছে বর।
(কিছু বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে)

Add to favorites
109 views