একাকী রজনী পাড়ি দেয়া অসীম আকাশে উড়ে বেড়ানো
আমি এক আহত অছ্যুত চিল
পিছনে আমার পড়ে থাকে চেনা পৃথিবী, সবুজ অরণ্য আর
ধূসর স্বপ্ন মেশানো শাপলার ঝিল।
আমি ধর্ষিতা, আমি নিষিদ্ধ গলির মোড়ে লাগানো সীল মোহর
আমার পদচিহ্নে সভ্যতা ছাড়ে উঠোন, ঘর-বাড়ী, গ্রাম-শহর।
কি বিভৎস কদাকার আমি সমাজের দুর্গন্ধ
পুরুষের ধমনীতে বিষাক্ত দুঃস্বপ্ন
নগরের দূষিত বায়ু; জল তরঙে রক্তের ছাপ রেখে
সকল অধীকার হতে আমি ছিন্ন।
হ্নদয় জুড়ে কষ্ট কাঁদে ক্ষররোদে তাপে তাপে
কি যে ভীষন জ্বালা ধরে অনুতাপে বিস্ফোরণে
শবের নিরবতা অস্তিত্ব জুড়ে শংকা লেগে থাকে পা’য়ে,
করুন সানাই বাজে ফিসফিস কানে কানে।
একদিন আমিও ছিলাম লোকালয়ে ভিরের মাঝে
কোলাহলে পেখম মেলে অনুরাগে
মা’য়ের বুকে বাবার কোলে, কারো হ্নদয়ে ছন্দ তুলে
হয়তো দলের ভিরে সবার আগে।
আজ ঘোর লাগা মাতাল চোখ ভিজে বিষাদ বৃষ্টি ঝড়ে
লাশ হয়ে যাই অনন্তের অদৃশ্য ফিসফিসে
হাটু ভাঁজে তিতাস জলে বৃন্তচ্যুত সমাজের নখদর্পে
জলের ভিতর জলরেখায় ভাগ্য বিধাতা হাসে।
আমি এক নষ্টা ধর্ষিতা বলছি,
তোদের সমাজের বহির্ভূত ভিন্ন কেউ
অন্ধকার ছেড়ে আলো দেখিনি কতদিন
আমার স্বাধীনতায় কেন অশান্ত ঢেউ?
আমি নির্ভয়ে ঘর ছেড়ে হেঁটে যাবো শত মাইল
মানুষের গা ঘেসে প্রকৃতির বুক দাপিয়ে, বুকে ধরে প্রিয় স্বাধীকার
যেতে যেতে কাঁশবনে হারিয়ে যাবো রাজপুত্রের খোঁজে
এনে দে আমার ছুড়ে ফেলা স্বপ্ন, এনে দে আমার মৌলিক অধীকার।
আমি এক ধর্ষিতা বলছি, সমাজের মোহর লাগানো সংবিধিবদ্ধ সতর্কাকরণ
ভিতর কাঁদে ভীষণ কাঁদে, তীব্র প্রতিহিংসায় জীবন দিয়ে যায় মরণ।
জেগে উঠি মধ্যরাতে কষ্টে কষ্টে হুংকার ছাড়ি দেয়ালের গা’য়
দেখি কয়েকশত কীট তখনো নির্লজ্জ্বতায় জড়িয়ে থাকে পা’য়।
তাদের চিনি, হ্যা ভীষণ চেনা লাগে তাদের
ভীত সংকিত আমি ভয়ে নির্জীব হয়ে যাই
রাতের আঁধারে আবারো সেই দুঃস্বপ্ন তেড়ে আসে
নিরুপায় চিত্তে মনে হয় কোয়ায় যে লুকাই।
ভয়ংকর ক্ষুধার্ত শকুন ওরা নারীর যোনী ঘেঁটে ঘেঁটে
রক্ত উল্লাসে মশগুল
অন্ধ বধীর নরপশু দেখেনা জননী-জায়া কি সহোদর
ছিঁড়ে নেয় সৃষ্টির প্রিয় ফুল।
অতঃপর হঠাৎ অশরীরি অস্পৃশ্য হুংকার আসে ভেসে
শুনতে পাই ধরনী কাঁপিয়ে কে বলে-
চেটে খা শকুনের দল
তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে খা
সকল নারীকে চেটে খা;
তোদের জননীকে চুষে খা।