আম্মুনী -
এইচ বি রিতা
Published on: মে 17, 2015
অতপর: মানুষ টা চলেই গেল! চারিদিকে একটা ভয়াবহ নীরবতা বিরাজ করছে।শব্দ, বায়ু, এমনকি কাঁঠের ফাকে বসত গড়া পোঁকামাঁকড়ের চলাচল ও যেন থমকে গেছে! বুঝতে পারছি, ভীষন একটা শুন্যতা, তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে!
অথচ, এ মানুষটার কঠোর শব্দ চয়নে,এক সময় কপালের বলিরেখা গুলো স্পস্ট হয়ে উঠতো! ঘন কালো মেঘদুত যেমন করে বিশাল নীলাকাশ টা তমিস্রায় আবরনে ঢেকে দেয়, মনের আকাশ টাও তেমন করে ঘন্ড খন্ড বিষাদ্বে ছেঁয়ে যেত! কতবার যে কানে তুলো গুঁজে দিয়েছি! কতবার যে পালাতে চেয়েছি! কখনো কখনো মনে হতো, মুক্তি চাই।বিধ্বস্ত পৃথিবীর, দুষিত ঘর্মাক্ত দেহ গুলো, অসহনীয় লাগতো। আহত পাখীর মত,লোকালয় ছেড়ে শুনঁসান নীরবতা খুঁজেছি দিনের পর দিন। দিনের শুরুতেই মানব কন্ঠ গায়ে জ্বালা ধরিয়ে দিত। নিজের ঘর, নিজের বিছানা, চা এর কাপ টা,নিজের একটা ভাবনার জগত, ছেড়ে কোথাও যেতাম না। কারো পায়ের শব্দে চমকে উঠতাম। জাগতিক শব্দ গুলো এত বিচ্ছিরি লাগতো!!
আমি চেয়েছিলাম মানুষ টা চলে যাক! যে যাওয়ার,সে তো যাবেই। হাজারো চেস্টায় তাকে ধরে রাখা যাবেনা। মানুষ টা চলেই গেলো। কিন্তু কেন এত শুন্যতা অনুভব করছি আজ! চোখ দুটো ঘুরে ঘুরে এদিক ওদিক কি যেন খুজছে ! শ্বাস টা দীর্ঘ হয়ে আসছে! গলার কাছটায় কি যেন একটা শক্ত কুন্ডুলী পাঁকিয়ে আছে!
আমি এ ঘর থেকে ও ঘরে,অস্থির পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছি! শব্দ নেই! মানুষ টা নেই! ফেলে রাখা পুরনো চাদর টায় হাত বুলাচ্ছি! এইতো এখান টায় বসেছিল! এইতো তার ভাংগা চশমাটা ! এইতো প্রিয় বই গুলো!
সব আছে! শুধু শব্দ নেই! মানুষটা নেই!
আমার অস্থিরতা বেড়েই চলেছে! লাইটের আলোয় চোখ জ্বালা করছে! চোখে কিছু পরলো কি! পানী জমা হচ্ছে কেন! হোক না! চোখের পানীতে আজ এক রাত না হয় ভেঁশে গেলাম। চোখের পানীতে আজ এক রাত না হয় সব পাপ ধুয়ে দিলাম! তবুও যদি অস্থিরতা আমায় হাত নেড়ে বিদায় জানায়!
আমি চেয়েছি মানুষ টা চলে যাক! তবে তার যাওয়ায় দু:খ কিসের! তার চলে যাওয়ায় কেন শুন্যতা আমায় মায়ার চাদরে জড়িয়ে ধরছে! নাকি আমি চেয়েছিলাম, মানুষ টা নয়, মানুষ টার ভিতরের স্বত্বাটা বদলে যাক!!! কি চেয়েছিলাম! বুঝিনা! আজকাল অনেক কিছুই বুঝিনা। শুধু বুঝতে পারছি, গলার কাছ টায় কি যেন একটা ভার হয়ে এসে, গলাটা চেপে ধরছে! নিশ্বাস টা ধীরে ধীরে, স্থির হয়ে আসছে!!
http://drkevil.com/home/ammuni/

Add to favorites
765 views