কবিতা:ছুটির চিঠি -
Jannatul Ferdousi
Published on: এপ্রিল 20, 2021
ছুটির চিঠি
#জান্নাতুল_ফীরদাউসী
মিঠি আর মেঘ পড়তে বসেছে,
আজ মাঝ বয়সী নতুন গুরু এসেছে।
মেঘ চটপটে দূরন্ত বালক ,
পড়ায় ফাঁকিবাজিতে সে রাজ,
মিঠি খুব শান্ত লাজুক ,
চেহারায় যেন লালপরীর নিখুঁত সাজ।
কিছুক্ষণ পড়াতেই গুরুর পেল ভীষণ তেষ্টা,
মেঘকে পাঠালো আনতে জল করতে হীন চেষ্টা!
মেঘ গেল ডায়নিংরুমে আনতে জল
মা ব্যস্ত আধোঘুমে সিরিয়াল দেখায়।
গুরু ভীষণ যত্নে কোলে নিয়ে পরীকে ,
গনিত বুঝাচ্ছে আপাদমস্তক জ্যামিতিক রেখায়।
সাত বছরের শান্তপরী করছে ছটফট,
অবশেষে মেঘ এলো জল নিয়ে ঝটপট।
পরের দিন গুরু এলো চকলেট চিপস নিয়ে,
মা ভাবে গুরু বেশ ভালো মানুষ জগতে।
মেঘ পড়তে গেল কিন্তু মিঠি কাঁদছে পড়বে না বলে,
মা বলে মিঠি পড়তে যাও ভালো মতে।
মায়ের রাগে মিঠি ভয় পায় খুব,
ওদিকে গুরুও অসহ্য কি করে পড়ায় দিবে ডুব।
যদিও গুরু কি চায় জানে না ছোট্ট পরী,
তবে তার চাহনী ও স্পর্শ বিরক্তিকর।
মাকে বলবে কিন্তু মায়ের তো সময় নেই,
শান্ত মেয়ে কেন কান্নায় রাগে করছে গড়গড়।
ভয়ে ভয়ে মিঠি এলো,মেঘকে বললো গুরুর পাশে বসো
মেঘও বসে,গুরু এবার কি ভেবে বলে মাকে নিয়ে এসো
মিঠি ভয়ে কুকড়ে গেল মাকে কি নালিশ দিবেন,
মা এলে, ভাবী কাল ওদের বাসায় পাঠালে ভাল হতো।
বিশেষ কাজ আছে ,আসার সময় পাবো না একদম,
ঠিকআছে পাঠিয়ে দেব বলে যান সময়টা কতো।
আজো পরী ধরেছে বায়না কিছুতেই পড়তে যাবে না,
মা বলছে মিঠি এমন করলে তোমায় ছাড় দেবো না।
মায়ের উপর রোষে ছলছল চোখে পরী গেল পড়তে,
মেঘ পরীর কথামত গুরুর পাশেই বসলো।
বাড়িতে গুরুর বউ আর পরীর বয়সী মেয়েটাও নেই,
মেঘকে আইসক্রিম পাঠিয়ে গুরু পরীর কাছে আসলো।
মেঘ আসার আগে গুরু পরীকে কাম ব্যাকরণ পড়ালেন
শরীরের ছোট্ট পাতায় বক্ররেখায় সম্পাদ্য আঁকলেন।
শান্ত মিঠি অমাবস্যা নিরব ,
আর হাসে না, খেলে না।
শুধু পড়ে, নিরবে কাঁদে ,
মাকে কেন জানি সইতে আর পারে না।
এভাবেই দিনেদিনে বেড়ে ওঠে মিঠি,
স্রষ্টার কাছে রোজ লিখে ছুটির জন্য চিঠি।

Add to favorites
655 views