বর্বরতার সীমা লঙ্ঘন -
এইচ বি রিতা
Published on: নভেম্বর 1, 2016
প্রতিদিন একি ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে! একটি ক্ষত শুকাবার আগেই আরেকটি ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে। নতুন ক্ষত সারাতে আবারো আমরা পুরাণো ক্ষতের শোক ভুলে যাচ্ছি। ছুটছি সমসাময়িক ব্যাথা নিয়ে, এদিকে-ওদিকে, যে যেদিকে পারছি! ফলাফল প্রতিবারের মতই শূন্য।
দিনাজপুরের উপজেলার ৫ বছরের ধর্ষিত শিশু পূজাকে নিয়ে যখনই লিখতে বসি, নিজের অজান্তেই চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। প্রচন্ড রাগ আর ঘৃণা নিয়ে প্রতিবাদের কোন ভাষা খুঁজে পাইনা। তনু, রিশা, আফসানা, জমিলা,খাদিজাদের বিচার চেয়ে চেয়ে যখন মানুষ হতাশ, ঠিক তখনই আরো একজন হলো এই পুরুষতান্ত্রীক সমাজে কাপুরুষের বর্বরতার শিকার। আর তার নাম- পূজা। পুতুল খেলে খেলে যার সন্ধ্যা ঘনায়, হাগু দিয়ে যে শিশুটি এখনো মায়ের জন্য অপেক্ষা করে ধুয়ে দিতে, সেই পূজা, ৫ বছরের পূজা, ধর্ষিত হল ৪২ বছরের এক চতুষ্পদি কুকুরের কাছে, যার নাম সাইফুল ইসলাম। ৮ ঘন্টা উপর্যোপরী ধর্ষণ করে শিশুটিকে। অপরিপক্ক যোনীপথ আকারে বড় করতে ব্লেড দিয়ে যোনীপথ কাটা হয়, যোনীপথে জলন্ত সিগারেট লাগিয়ে দেয়া হয়। কি নির্মম ভাবে ধর্ষন করা হয়েছে শিশুটিকে! যাকে বাবা বলে ডাকত সেই পশুই তাকে ধর্ষন করে। শিশুটির নির্যাতন দেখে আতকে উঠে চিকিৎসকরা। শিশুটির যন্ত্রণা দেখে বুক ফেটে যায় তার স্বজনদের। শিশুটি এখনো মুখ খুলে বলতে পারছেনা তার অসহনীয় ব্যাথার কথা। শিশুটি এখনো ভাল করে বুঝতেই পারছেনা তার সাথে ঘটে যাওয়া বর্বরতার ঘটনা।
আপনাদের মনে আছে কিনা জানিনা, আমি তখন খুব ছোট, স্কুলে পড়ি। ১৯৯৮ সাল। তানিয়া নামে একটি ৫ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছিল ঢাকা সিএমএম কোর্টের পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। অবুঝ তানিয়া খুব বেশী কিছু বলতে পারেনি সেদিন, তবে পুলিশকে অপরাধীর মাথায় লম্বা চুলসহ বিভিন্ন উপসর্গ বর্ণনা দিয়েছিল ঠিকই। কিন্তু পুলিশ তার কোন কথাই পাত্তা দেয়নি। ঊল্টো পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ঘঠিত অমানবিক ঘটনা ধামাচাপা দিতে আসামীকে বাঁচিয়ে দেয়া হয়েছিল। যেমনটি করা হয়েছে আমাদের পুলিস ও বিচার বিভাগ কর্তৃক তনু ধর্ষন ও হত্যার বেলায়। হত্যাকারী কে বা কারা, তা জনগন নিশ্চিত জানলেও, ধর্ষণ/হত্যাকারী সনাক্তকরণের আঙ্গুল মূল আসামীদের দিকে নির্দেশিত হওয়ার আগেই, সকল ঘটনা চাপা দিয়ে দেয়া হয়েছে। তনুর জীবনের চেয়ে, তনুর ধর্ষণকারী/হত্যাকারীর ভাবমূর্তি রক্ষা করা রাষ্ট্রের কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। আর তাই, তনু ধর্ষণ ও হত্যা, একটি রাষ্ট্রীয় গোপন চুক্তি হয়েই রয়ে গেল সরকার ও সেনাপ্রধানদের মধ্যে।
১৯৯৮ তে ৫ বছরের শিশু তানিয়ার সাথে ঘটে যাওয়া সেই বর্বরতার বিচার যদি হতো, যদি সেদিন ঘার হতে কুকুর ধর্ষকের মুন্ডু কুপুকাত করা হত, তাহলে আজ সেই কুকুরের সহোদররা প্রতিদিন ধর্ষণ খেলায় মেতে উঠার সাহস পেতনা; তবে আজ সাইফুলের মত বেজন্মা যারজ বিকৃত যৌনরোগী তার নেতিয়ে পরা পুরুষাঙ্গ ধার করার চেষ্টায় একটি ৫ বছরের শিশুকে নিয়ে বিকৃত খেলায় মেতে উঠতো না।
আজ হয়তো পৃথিবীর কোন এক প্রান্তে বসে সেই ১৮ বছর আগে ধর্ষিত হওয়া তানিয়া, অশ্রুবর্ষণ করছেন এই ভেবে যে, বিচার সেকালেও হয়নি; একালেও হবেনা।
আজ এই সমাজ ও রাষ্ট্রের ধর্ষকের প্রতি উদাসীনতার কারনে, বিচারহীনতার কারণে, নারীর প্রতি, শিশুর প্রতি কুকুরদের নির্মতাকে প্রশ্রয় দেয়ার কারণে, দেশের “সোনার” ছেলেদের “সোনায়” দিন দিন উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কুকুর শুনেছি ভাদ্র মাস এলে যৌনক্ষুদায় পাগল হয়। এই সব চতুস্পদি কুকুররা ১২ মাসই যৌন পাগল থাকে। এদেরকে হয় লেথ্যাল ইঞ্জেকশন পুশ করে মেরে ফেলা উচিৎ, নয়তো পুরুষাঙ্গ কেটে সেই পুরুসাঙ্গ ভবিষ্যত প্রজন্মের পুরুষদের জন্য দৃষ্টান্ত স্বরুপ যাদুঘরে রেখে দেয়া উচিৎ, যেন ইতিহাস ক্ষনে ক্ষনে পাপীদের স্মরণ করে। যেন ভবিষ্যত প্রজন্মের আর কোন পুরুষ ধর্ষণ করার সাহস না করে।
_________ডার্ক এভিল(HB Rita)

Add to favorites
1,861 views