শরৎ আর কাশফুল -
আসাদুজ্জামান শাওন
Published on: অক্টোবর 20, 2015
শরৎ আর কাশফুল
আসাদুজ্জামান শাওন
——————————
শরৎতের শুভ্র এক বিকেল বেলা
নীল রং দিয়ে লেপটে থাকা একটা নীল আকাশ,
যেন তেল রঙ দিয়ে আঁকা কোনও শিল্পীর পোট্রেইট।
ঠিক নীল আকাশটার নিচে আমি দাঁড়িয়ে,
আর পাশ দিয়ে বয়ে চলা একটা নদী।
নদীর পাশে বিস্তৃর্ণ কাশফুলের মাঠ
যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে,
শত শত বছর ধরে।
আর কাশফুলের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে,
হলুদ রঙের শাড়ী পড়া আমারই মহাকাল!
খুব শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
যেন একটা স্বর্গের অপ্সরী,
আমারই অপেক্ষায় প্রহর গুনছে।
আমাকে দেখে হয়ত বড্ড অভিমান করে আছে মহাকাল,
খুব দেরী করে ফেলেছি তো তাই!
বড্ড রাগ করে আছে পাগলীটা,
চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে দূরে।
এই মহাকাল!
কি হয়েছে তোমার?
খুব রাগ করেছো বুঝি,
দেখো আর কোনদিন এমনটা হবে না,
আর কোনদিন দেরী করবো না আমি, মহাকাল।
এই যে আমি প্রতিজ্ঞা করলাম!
মহাকাল,কথা বলোনা একটু,
চুপ করে থেকো না!
অতঃপর একটু একটু করে মহাকালের সম্মুখে এগিয়ে যাওয়া,
তখনও মেয়েটা বড্ড অভিমান করে দাঁড়িয়ে আছে।
এতটা অভিমান যে,
আমার দিকে ফিরেও তাকালোনা।
মহাকাল,কাশফুলের দিকে চেয়ে আছে একদৃষ্টিতে!
যেন কাশফুলের কাছে নালিশ করছে আমার বিরুদ্ধে।
এই মহাকাল!
আমার চোখের দিকে একবার তাকাও না,
একটি বার না হয় তাকাও।
বললাম তো আর এমনটা হবে না
এই দেখো আমি কানে ধরে আছি।
একবার শুধু তাকাও,শুধু একটি বার!
তারপর চুপটি করে মহাকালের কাছে যাওয়া,
কানের কাছে মৃদু শব্দে বলা ভালোবাসি মহাকাল।
তারপর অভিমান ভুলে বুকের গহীনে অবসাদ আশ্রয় খোঁজা মহাকালের;
আর মহাকালের চোখ দিয়ে একরাশ অশ্রু ঝরে পড়া আমারই বুকে,
আর কয়েক’টি বাক্য দিয়ে গড়া একটা মধুর ঝগড়া।
অতঃপর মহাকালের প্রতিশ্রুতি বদ্ধ দু’টি হাতে বন্দী আমার হাত,
অতঃপর চোখে-চোখে বন্দী দু’জন অনন্তকাল,
ঠোঁটে-ঠোঁট রেখে তৃষ্ণা নেওয়ার নির্লজ্জ সহবাসের রংচটা প্রতিযোগিতা।
কাশফুলে লেগে থাকা কয়েক’টা মলিন স্মৃতির স্পর্শ!
তারপর নদীর তীরে বসে স্বচ্ছ পানিতে নিজেদের প্রতিচ্ছবি দেখা,
আর খালি চোখে দেখা নীল আকাশের রঙিন পোট্রেইট।
তারপর গোধূলি বেলার শেষ লগ্নে বন্দী,
তোমার আর আমার রং-চটা স্কেচ্।
অতঃপর ইতিহাসের শেষ অধ্যায়!
যেন কাশফুলের কলম দিয়ে শরৎতের পৃষ্ঠায় লেখা,
তোমার আর আমার এক অন্য প্রণয়-কাব্য।

Add to favorites
19,729 views