সোয়াসের চাল -
এইচ বি রিতা
Published on: মার্চ 28, 2017
যে মেয়েটির হয়েছিল জন্ম তিতাস নদীর ধারে
ফুল-চন্দন সমাহারে তিলক কপালে ভাগ্য বিতারিত
আশার মল পায়ে উলু ধ্বনী,
দেখেছিল বাবা সূদুর প্রভাতী আলো;
অশ্রুপাত শেষে স্তবক সুগন্ধে প্রিয় দুটি হাত জড়িয়ে ছিল;
মায়ের বাহুডোরে,
সে মেয়েটি আজ পাথর ভাঙায় নিমগ্ন, কঁচি হাত দুটি
নক্ষত্রের আলোয় খাতায় টুকে
সোয়া সের চাল, দুটি আলু
ছিপি আঁটা বোতলে ১০ টাকার তেল।
পাশের হোটেল থেকে গান ভেসে আসে,
নরম হাতের ক্ষিপ্রতায় হঠাৎ শব্দ বেড়ে যায়!
আজ নক্ষত্রের আলো দেখা হয়না তার,
ব্যাঙ্গাচীর জীবনচক্র দেখতে দেখতে বয়োসন্ধি নাঁভিমূলে
প্রসারণের উদাসীনতায় পাথর গু্ড়োর সাথে,
স্কুল পলাতক গল্পগুলো ধুলো হযে উড়ে যায়;
ঘৃণা নেই, ক্লান্তি নেই; কান পেতে পেটের শব্দ শুনে,
বিনুনি দোলনে বই খাতা, রং তুলি
এক্কাদোক্কা, বউচি খেলায় মাতোয়ারা সন্ধ্যা
উবে যায় দৈন্যতায়; পাথর গুড়োর সাথে।
মেয়েটি তখনো বোজেনি যে পথ গিয়েছে বেঁকে
সেখানে লড়াকু জীবন দুহাত পেতে
এ হাতে সোনার কাঁকন নয়, গুটি কয়েক জ্বালাময়ী ফোঁসকা পাবে ঠাঁই,
নিশ্চিত কোন দামী বিছানায় হবেনা ঠাঁই,
হাঁতুরীর গর্জনে জীবন ছুটে যাবে মৃত্যুর পানে; মেয়েটি নিস্পলক
দূর হতে দেখে ব্যথিত আকাশ, বক্ষ ফাটা লক্ষ তারার ক্রন্দন
নগ্ন সভ্যতার মত শোকাহত মনে,
দিন শেষে কোঁচরে ভরে ৭০ টাকা।
অতঃপর, মায়ের স্নেহার্ত মুখাবয়ব মনে কেবল হিসেব কষে
সোয়া সের চাল, দুটি আলু;
ছিপি আঁটা বোতলে ১০ টাকার তেল।

Add to favorites
446 views