আমি পুরুষ, আমি শ্রেষ্ঠ মহাশক্তি। আমি মহাদেব, আমি সৃষ্টির সেরা জীব। আমি অহংকারী কারণ আমি পুরুষ, সকল ক্ষমতার অধীকারী।
আমি পুরুষ। ধর্ষণ আমার মৌলিক অধিকার। আমি বিধাতার এক বিস্ময়কর সৃষ্টি! আমি এক বিশেষ লিঙ্গের অধিকারী। আমার যা আছে,তা নারীর নেই। আমি চাইলেই নারীকে ধর্ষণ করতে পারি! আমি চাইলেই নারীর সতীত্ব হরন করতে পারি! আমি চাইলে যখন তখন ধারালো যন্ত্রে অবলা নারীর উপর ঝাপিয়ে পরতে পারি।
নারী তোমার এত কিসের বাহাদুরী? কি আছে তোমার? তুমি ক্রোধে ফুসফুস করে উঠে, অভিশাপ ছুড়ে দাও; অতঃপর নেতিয়ে পরো জমিনে। মনে রেখ, তোমার বিশেষ কোন যন্ত্র নেই। তুমি অপয়া, অথর্ব, সমাজের বোঝা। তোমার জন্ম কেবল আমার উত্তপ্ত দেহ শীতল করার জন্য। । বলি,কি আছে তোমার? কিসের এত অভিযোগ?
আমি ওই নুপুংশুক পুরুষদের মত নই! ওরা জরাগ্রস্ত, ওরা অকর্মণ্য। ওরা পুরুষ জাতীর কলংক! ওরা জানেনা কি বিশাল ক্ষমতা ওদের! ওরা জানেনা লুঙ্গির নিচে লুকিয়ে রাখা বিশেষ যন্ত্রটি কতভাবে ব্যবহার করা যায়! ওরা নারীর পা চাটা কুকুর! ওরা নারীর কোলে মাথা রেখে রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনে! ওরা নারীর বুকে শুভ্র বেলীগুচ্ছ গুঁজে দেয়, ওরা নারীর দেহে পরম মমতায় হাত বুলায়! ছিঃ ছিঃ ছিঃ। থু থু ফেলি তোদের মত পুরুষের মুখে! তোরা আমার সহোদর নস। শোনে রাখ কাপুরুষের দল,নারীকে মমতায় নয়, ছিড়ে খেতে হয়, ঠিক আমার মত! খামচে, দাঁত বসিয়ে, টেনে হিঁচড়ে ছিড়ে ছিড়ে খাবি। স্তন যুগলে পাঁচ পাঁচটি দাঁত বসিয়ে দিবি। পা টেনে হাড়গোড় সব ফাক করে দিবি! তারপর বিশেষ যন্ত্রটি চালা! যতক্ষন নারী যোনী ক্ষত বিক্ষত রক্তাক্ত না হবে, ততক্ষন পর্যন্ত চালা! সব চুরমার করে দে! কিসের এত বাহাদুরী ওদের? যন্ত্র থেমে গেলে ভিন্ন পন্থায় ওদের খুবলে খা! রড ঢুকিয়ে দে, বালি দে, কাঁচের টুকরো ঠেসে দে! ছিড়ে দে, ছিড়ে দে…ওদের সকল আত্বঅহংকার ধুলোয় মিশিয়ে দে!
তোরা কাপুরুষ শুয়োরের বাচ্ছা! তোরা নারীকে ভোগ করতে জানিস না।তোদের মুখে থু থু ফেলি নুপুংশুকের দল!
আমি পুরুষ। আমি তোদের মত কাপুরুষ নই। নারী দেহ দেখে যদি আমার জিব লিকলিকিয়ে না উঠে, তবে আমি কিসের পুরুষ? জামার ভাঁজে স্তনযুগল, শাড়ীর ভাঁজে নিটোল নাভি, সেলোয়ারে ঠাসাঠাসি নিতম্ব দেখে যদি আমার যন্ত্র গর্জে না উঠে তবে আমি কিসের পুরুষ?
ধর্ষন আমার জন্মগত অধিকার। শিকারীর মত আমার ধুর্ত চোখ শিকারের খুঁজে হন্য হয়ে ঘুরে। যেখানেই নারীকে পাই, ঘরে-বাহিরে,শিক্ষালয়ে, বাসে, অফিসে, জঙ্গলে…আমি ধর্ষণ করি। শিশু-বৃদ্বা, আত্বীয়-অনাত্বীয়, নিজ কন্যা কাউকে ছাড়িনা! যন্ত্র সচল হলে জাত-ধর্ম, বর্ন, নৈতিকতা, মানবতা কিছুই মাথায় আসেনা। শুধু মনে হয়, দেই ঢুকিয়ে………তবেই শান্তি! আহ! পরম শান্তি!
শোন দুর্বাসিত নারী, হ্যা, তোদের বলছি,তোরা হচ্ছিস পায়ের জুতো, বাসি ফুল। তোদের দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়না! তোদের ঘরে তুলে পুজো দিতে অসহ্য লাগে,তোদের ভালবেসে বুকে নিতে পারিনা। কারন আমি ধর্ষক। আমি তোদের নিত্য নতুন ভোগ করবো। তোরা চিৎকার করবি, পা ধরে প্রান ভিক্ষা চাইবি, আমি উল্লাসে ফেটে পরবো। ধর্ষণ করতে করতে তোদের মেরে ফেলবো, তোরা মরতে মরতে মাটি খামচে ধরবি, আমি তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবো।কারন আমি নরপতি, আমি বিশেষ যন্ত্রের অধিকারী পুরুষ। আমার মায়া নেই, আমার মানবতা নেই; আমার পাপ নেই! ধর্ষণ আমার জন্মগত অধিকার!
হে গর্দভ জাতী, তোরা কি ভুলে গেছিস ইয়াসমিনের কথা? পুলিশের খাকি পোশাকে আমিই তাকে ধর্ষন করে মৃতদেহ ফেলে রেখে যাই স্কুলের সামনে। কি করতে পেরেছিস তোরা?
হেনার কথা ভুলে গেছিস? ধর্ষন করে আমি এখনো টিকে আছি। আর হেনা কোথায়? সালিশে মাত্র ৭০ টি দোররা খেয়ে সেদিনই মরে গেল? অবলা নারী!
পুর্নীমা রানী শীল, ছবি রানী, সাবেকুন্নাহার, গাড় উপজাতী, গৃহকর্মী থেকে শুরু করে সোহাগী জাহান তনু…………… একে একে সব আমার লালসার শিকার! কি করতে পেরেছিস? তোদের সমাজ, তোদের নারী মানবাধিকার সংঘঠন, এত মিটিং-মিছিল…আমাকে দমাতে পেরেছিস কি? পারবিনা। কারন তোদের সমাজ, তোদের রাষ্ট্র নিজেদের গণবিরোধী রাজনীতি ও ক্ষমতার স্বার্থে আমাকে লালন করে, ব্যবহার করে। আমি তাদের শ্রেণিস্বার্থ ও অস্তিত্বের সাথে যুক্ত। আমার অস্তিত্ব উপরে ফেলা সহজ নয়।
আমি ধর্ষক। আমি তোদের সমাজ ও রাষ্ট্রের শোষণ-শাসনের স্বার্থে টিকে থাকি। আর আমার স্বার্থে, রাষ্ট্র- সমাজ আমায় অধিকার দেয় ধর্ষণ করার।
পুনশ্চঃ এটি একটি স্যাটায়ার। এখানে “নুপুংশুক পুরুষ” বলতে সত্যিকার মানবিক পুরুষদের বুঝানো হয়েছে ধর্ষকের দৃষ্টিকোণ হতে। কেবল মাত্র ধর্ষকদের উদ্দেশ্যে তীব্র ক্ষোভের প্রকাশ করেছি। ব্যাক্তিস্বার্থে কেউ উত্তেজিত হবেন না।