জীবনচক্র ১ -
এইচ বি রিতা
Published on: জুন 10, 2013
চাহিদা মানব সৃষ্টির এক বিশাল প্রয়োজন। তিনবেলা খাওয়া, ভাল কাপর, একটু ভাল থাকা, বেশী না হোক ক্ষুদ্র সুখ, এক টুকরো জমিন, কিছু প্রাপ্তি, একটু ভালবাসা….. এ সবই আমাদের প্রয়োজন। প্রয়োজন থেকেই আকাঙ্খার জন্ম।
চাওয়া গুলো পুরন হলে ভাল! না হলেই ভয়াবহতায় পৃথিবী ছেঁয়ে যায়। আর আকাঙ্খা যেখানে বিদ্যমান, কষ্ট সেখানে দৃশ্যমান।
পৃথিবীর বুকে অগনিত অসুখী মানুষ কেবল এই না পাওয়া থেকেই! চাওয়ার সবটুকু কি পাওয়া হয়? পাওয়া কি উচিত? পুরোটা পাওয়া হয়ে গেলেই মানুষ জীবনের উপর তেষ্টা হারিয়ে ফেলতো।
ফাইবস্টার হোটেলে খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে ক’জন স্রষ্টাকে স্মরন করেছে? বরং ফুটপাতে অভাবী মানুষের ভিরে স্রষ্টার নাম উচ্চারিত হতে শোনা যায় বেশী।
অপূর্ণতা কার নেই? সবার আছে। কেউ পরিপূর্ণ নয়। পার্থক্য শুধু আমাদের দেখার ভুল, জানার ভুল, বিচারের ভুল।
নদীর ওপার দেখে এপার সব সময় বিচ্ছিরি লাগে। ওপারে গেলে বুঝা যায়, সব পাড় দূর থেকে একি দেখতে। নিজের ভাগে যা নির্দিষ্ট করা আছে, তার থেকে বেশী এক ফুটাও ভোগ করার কোন ক্ষমতা নেই আমাদের। অন্যকে দেখে আফসোস করে কেবল দুঃখ বাড়ে।
ভালবাসার সম্পর্ক গুলো খুব পোক্ত। আবার নাজুক ও। এক পলকেই সম্পর্ক জুড়ে। আবার এক মুহুর্তেই সম্পর্ক ভাঙ্গে।
মনে হয় পাশের মানুষটি কেমন যানি! নির্বোদ, ভালবাসাহীন, ঠিক যেন আমার উল্টো! বিষাদে পৃথিবী ছেঁয়ে যায়! আহ কি কষ্ট!
তারপর একদিন , কোন এক উত্তুরে হাওয়া হয়ে এক অশনি প্রতিবিম্ব হঠাৎ এসে প্রাণে দোলা দিয়ে যায়! মনে হয়… এইতো বেশ! এইতো আমার সাধনা! আমার অপূর্ণতার ক্ষত সারিয়ে দিতে এইতো আমার পূর্ণতা। তারপরই আমরা ভেসে যাই মোহে! ভেসে যাই অনৈতিক ঝড়ে!
কুমড়ো ডগার ন্যায় লিকলিকিয়ে বাড়তে থাকে লালসা! বর্তমান পিছিয়ে যায় শত বছর পিছনে। অন্ধকার হাতে ভবিষ্যত চলে আসে ঠিক ললাটের ডান পাশে! আর তখনি আমরা ভেসে যাই অনিশ্চিত অন্ধকার হাতে এক অসীম সাগরে! ধংস্ব যেখানে নিশ্চিত, ভবিষ্যত যেখানে নিশ্চিহ্ন! যেখানে কেবল অনৈতিকতা আর পাপ জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরীর অগ্নুৎপাতে ভস্মিভূত ছাই হয়ে উড়ে যায় আকাশসীমায়!
চোখে তর্জনী ঢুকিয়ে বাস্তবতা শিখায় ভুল। আর তার নিষ্ঠুর খেলায় মন ভেঙ্গে লুটিয়ে পরে জমিনে। ত্রিশুলাদন্তে সমাজ হাসে মনুষ্যের পতনে। জীবন সরে যায় কয়েক যুগ দূরে।
মানব চামরায় দগদগে ঘা হয়। সে ঘা’য়ে মনুষত্ব পোড়া গন্ধ।
বাস্পীয় অনুভুতি হয়ে সে গন্ধ ছড়িয়ে পরে এক হতে একক, দশক, শতকে। ছড়িয়ে পরে অস্থ্যি মজ্জ্বায় কোষে কোষে সমাজের ফুটপাতে, গলিতে, বনবাঁদারে লোকালয়ে! আর তখন বেঁচে থাকা হয়ে উঠে মৃত্যু যন্ত্রণা।
একটু ভাল থাকার চেষ্টায়, আমরা জেনেও ভুল করি। ভুল করে ভুল করি। নিজের অজান্তে ভুল করি।আর সে ভুলে আমাদের ব্যাক্তিস্বত্তা, আমাদের অহংকার ও বৈশিষ্টে ছন্দপতন শুরু হয়। মানুষ থেকে আমরা পরিনত হই উচ্ছিষ্ট খাবারে।
প্রতিটি দিন হোক একটি নতুন শুরু। প্রতিটি ভোর হোক স্রষ্টার নামে। অপূর্ণতা থেকে কোন অনৈনিকতার জন্ম না হোক, এই হোক প্রত্যাশা।

Add to favorites
1,321 views