নারী -
Jannatul Ferdousi
Published on: ফেব্রুয়ারী 14, 2021
নারী
জান্নাতুল ফীরদাউসী
স্রষ্টা মানুষকে সৃষ্টির সেরা বলেছেন কোথাও পুরুষকে সেরা বলেনি কিন্তু পুরুষের ভাবখানা এমন পুরুষ হলো মানুষ, আর নারী হলো ভোগ্যপন্য, ঠিক যেনো আরবের অন্ধকার অবস্থাকেও হার মানায়।
ইসলাম নারীকে সম্মানীতো করলেও সমাজের পুরুষ মানুষগুলো অজ্ঞতার অন্ধকার থেকে আজও মুক্ত হতে পারে নি , তারা নারী কে দাসী থেকে সেবিকা গ্রেড দিতে পেরেছে এর বেশি না।
আমার কথায় হয়তো অবাক হচ্ছেন ? কিন্তু অবাক হওয়ার কিছু নেই । মিলিয়ে নিন কতোটা যুক্তিযুক্ত কথাগুলো।
কন্যাসন্তান পৃথিবীতে এলো রহমত হিসেবে অথচ মানুষ অমুকের একটা মাইয়া অইছে ,বাহ! শুরুতেই তাচ্ছিল্যের কি সুর! মেয়ের পরে এবার একটি ছেলে হলো সুর বদলে গেলো মাশাআল্লাহ অমুকের কপাল খোলছে আল্লায় মাইয়ার পর এবার একটা পোলা দেছে! এতোক্ষণ বললাম পড়শীর কথা যে ঘরে খেয়ে বনের মহিষ তাড়ায়।
এবার আসি ঘরে মেয়ে প্রসব করায় প্রসূতি মায়ের তেমন যত্নের দরকার নেই । মা ও ভাবছে প্রথমেই মেয়ে হলো ? আমার মত তোর কষ্টের জীবন শুরু মা । আল্লাহর দুনিয়ায় আমাদের অধিকার সম্মান কিতাবে কিবা পুস্তকে একরকম আর বাস্তবে তা একেবারে বিপরীতটাই বেশি সমাদৃত । স্বামীমহাশয় আসছে তাড়াতাড়ি খাবার দাও স্ত্রী কতোটা কষ্ট পাচ্ছে এটা তার দরকার নেই কারন নারী সব কিছু মেনে আর মানিয়ে চলবে এটাই তাদের জীবন ব্যবস্থা। প্রচন্ড ব্যাথাকে উপেক্ষা করে স্ত্রী স্বামীর সেবায় হাজির কিন্তু স্বামীতো স্বামী উপার্জন করে ভরনপোষণ করে কাজেই তার ঘরে এসে সেবা পাবে এতে ভুল হলে তাকে তিরস্কার,প্রহার পেতে হতেই পারে কারন সে নারী ।
পুরুষের মনোরঞ্জনই তার কাজ তার আবার ক্লান্তি কষ্ট পেতে আছে নাকি? একবুক কষ্ট চেপে স্বামীর সাথে হাসিমুখে কথা বলতে হবে না হলে যে পাপ হবে!
সত্যি কি আল্লাহ নারীর প্রতি এতোটা নিঠুর?
তাই পুরুষকে বাদশা করে পাঠিয়েছে আর নারীকে দাসী হিসেবে পাঠিয়েছে? যদি এর উত্তর হ্যা হয় তবে স্রষ্টা কি ন্যায় বিচার করেন না? কিন্তু কোরআন পরিস্কার বলে আল্লাহ ন্যায় বিচারক তার মানে এগুলো শক্তিশালী শয়তান নরদের দুষ্টচক্র মাত্র! আর যদি না হয় তবে নারীকে ভোগ্যপন্যের মত ব্যবহার করার দুঃসাহস পুরুষ জাতি করছে কি করে?
কিছু মানুষ আছে যারা নিজেকে আল্লাহ ও রাসূলের অনুসারী দাবী করে অথচ তারা তার মাতা, স্ত্রী,ভগ্নি,কন্যার সাথে সুবিচার করে না যে ভাবে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সঃ) করেছেন।
যারা ইসলাম বোঝে না তারাতো পতিতালয়,রাস্তাঘাট,পুকুর,নদী জঙ্গল ,নিজের ঘর যেখানেই নারী পাবে সেখানেই তাকে ভোগের জন্য মেশিন তুলে দাড়িয়ে যাবে! তাদের শারিরীক মানসিক সকল প্রকার অত্যাচার করে বন্ধমহলে পাশবিক অট্টহাসিতে মেতে ওঠে। আর যারা ইসলাম বোঝে তারাও এই সুরটা একটু ঘুরিয়ে গায় তারা বারবার নারীকে ম্মরণ করায় নবীজীর ১৩ জন স্ত্রী ছিলো,কোরআনে ৪ জন বিয়ে করার পক্ষে দলিল আছে।
না হেসে পারলাম না এখন কিন্তু এরা মনের ভুলেও বলে না যে যদি সুবিচার করতে না পারো তবে একজন স্ত্রী ই উত্তম। তারা এটা কখনো বলে না বিধবা বয়স্ক সন্তানসহ নারীকে টগবগে তারুন্যে বিয়ে করার পর নবীজী তার কামনা বাসনার জন্য দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণ করেন নি তার প্রথম স্ত্রী জীবিত থাকা পর্যন্ত। তার প্রথম স্ত্রী র মৃত্যুর পর যত বিয়ে করেছেন তা আল্লাহর হুকুম ছিলো পূর্বের মতই । তিনি তাদের বিয়ে করে সম্মান দিয়েছেন ,নিরাপত্তা দিয়েছেন অথচ আমাদের সমাজ নারীকে ভোগ্যপন্য ভেবে, ভোগের জন্য কিনে আনেন তাও আংশিক দামে কিবা বাকিতে তারপরে ভোগশেষে তাকে আর ভালো লাগে না, তাকে দিয়ে তার আর চলে না, নতুন কিছু মনে চায় কারন ৪ জন স্ত্রী গ্রহণ করা যাবে তো! এবার আল্লাহর দাসী কে ইমোশনাল ব্লাকমেইল শুরু করে যে অনুমতি দাও ২,৩,৪ সম্পূর্ণ করি আর প্রথম বাধ্য হয়ে যদি অনুমতি দিয়ে দেয় তবে নাচন দেখে কে? বিয়ে করে নেক হাসিলে ব্যস্ত নারীখোর পুরুষ ।
আল্লাহ নারীকে শারিরীক শক্তি পুরুষের অর্ধেক দিয়েছেন আর পুরুষের মানসিক শক্তি কম। কিন্তু বর্তমান অবস্থা দেখলে মনে হয় আল্লাহ নারীকে পুরুষের থেকে শক্তিশালী করেছে তাই নারী এখন ঘরে বাইরে সমান তালে কাজ করে আবার ঘরের পুরুষ টার মনোরঞ্জনে ত্রুটি হলে আর রক্ষা নেই।
পুরুষ অসুস্থ হলে তাদের সেবিকা সেবা করে, করতে বাধ্য,কিন্তু নারী অসুস্থ হলে তা নিয়েই সকলের সেবা চালিয়ে যেতে হয় না হলে বাড়াবাড়ি হয়ে যায়। পুরুষ আল্লাহর কাছে এজুলুমের জবাব দিয়ে মুক্তি নিশ্চিত করতে পারবে তো?
একটা মেয়ে যদি নিজে আয় করেই খাবে তবু শক্তিশালী পুরুষকে সেবা করতে হবে এই পুরুষ হতে পারে বাবা,ভাই,সন্তান, স্বামী যে কেউ তবে এরা সবাই এক গোত্রের কেউ নারীর কষ্ট বোঝে না তবে নারীকে কষ্ট দিতে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ বলা চলে।
স্বামী সব ঠিক ঠাক না পেলে স্ত্রী র সাথে অশান্তির শেষ রাখে না ,তবে তাকে কখনো বুঝতে চেষ্টা করে না ,সে সুস্থ না অসুস্থ? কারন সে পুরুষ আর নারী তার সেবিকা সেবাই তার ধর্ম।
#ছেলে বড় হলো আয় করে এবার মা হলো দাসী ঠিকমত সব না পেলে মাকে গালমন্দ করতে রুচিতে বাঁধে না কারন ছেলে এখন পুরুষ ।
মায়ের বুকের দুধ শেষ ,আদরের পুত শেষ!
#বাবা মেয়েটার বিয়ে হয় নি , বিধবা কিবা স্বামী পরিত্যাক্তা মানে হলো বোঝা এ এখন বাবার পরিবারের পেটে ভাতের দাসী সব অপমান তাকে সইতে হবে প্রতিবাদ চলবে না কারন সে সমাজের বোঝা। যদি ও সে নিজে আয় করে বাবার ঘরে আশ্রয় নিয়ে থাকে তবুও।
#ভাই উনিও পুরুষ বোন বাসায় থাকে মানে বাসার সব কাজ সে করবে কারন সে বাসায় থাকতে হলে তাদের সব কাজ করে তাদের মন যুগিয়ে চলতে হবে না হলে নিয়মিত কথায় কাজে জুলুমের মাত্রা বৃদ্ধি করবে যদি সে নারী নিজের আয় নিজে খায় তবুও ।
এভাবে নারী শুধু মানিয়ে আার মেনে চলে যায় লোক লজ্জার ভয়ে। বুকে অগ্নিদহন চেপে হেসে কথা কয়,সুখের অভিনয় দারুণ চালায় ,দেখে বোঝার উপায় থাকে না নিশ্চয়।
নারী অপার সম্ভবানময় ,সহনশীল ,উচ্চ মানসিকতার উজ্জ্বল নক্ষত্র তাই নিজে পুড়ে অন্যকে বরাবর স্নিগ্ধ আলো দান করে যায়।

Add to favorites
497 views