ফেরিওয়ালা -
শঙ্খ চিল
Published on: ডিসেম্বর 21, 2017
এই শুনছো –
ফেরিওয়ালা ও ফেরিওয়ালা
এই ; এই যে শুনছো?
তোমার কাছে কেজিখানেক জ্যোৎস্নার আলো হবে?
দাওনা আমায়!
আমার এ ধূসর প্রাণহীন পৃথিবীতে বড্ড জ্যোৎস্নার আলোর অভাব,
দিবে আমাকে সোয়া কেজি জ্যোৎস্নার অদ্ভুত আলো;
দেখো!আমার এ ভুবন জুড়ে অনন্তকাল কেবল অমাবস্যা।
ভয় হয় আমার – ফেরিওয়ালা
বড্ড ভয় হয়;অন্ধকারে আমার।
আমি কি অন্ধকার নিয়ে এ পৃথিবী প্রস্থান করবো?
ফেরিওয়ালা!
জীবন থেকে কতগুলো বছর ঝড়ে পড়লো শুকনো পাতার ন্যায়
আলোর গহীনে ভেসে যাওয়া হয়নি আমার
এমনকি দর্শন – স্পর্শ।
প্রায় ভুলতে বসেছি নিজের সুশ্রী মুখাবয়ব
বহুকাল গত হলো -আয়নাতে নিজেকে দেখা হয়নি;
এইখানটাতে ; ঠিক এইখানটাতে গড়েছিলাম একটা দিঘী
দিঘীতে শান-বাঁধানো ঘাট।
বিন্দু বিন্দু শিশির বিন্দু গড়া একটা স্বচ্ছ দিঘী;
জলের রং রংহীন -আমার চোখের জল
অবিরাম স্বেচ্ছায় ঝরে পড়ছে যুগের পর যুগ
অশ্রুপাত থামেনি কোনদিন আর।
ফেরিওয়ালা!দাওনা গো সোয়া কেজি জ্যোৎস্নার আলো,
অন্তত শেষ বিদায়ের আগ মুহূূর্তে
নিজের ভুুলতে বসা মুখাবয়ব ;দিঘীর স্বচ্ছ জলে দেখে নিবো – শেষবারের মতন;
এরপর উড়ে যাবো,পৃথিবীকে বিদায় জানিয়ে।
বুক জুড়ে অঙ্কিত ছিলো আজন্ম তৃষ্ণা আমার
জল তেষ্টায় – সেই যে কলস হাতে গিয়েছিলাম ঘাটে,
সেটা ছিলো দুঃসময়ের এক মুহূর্ত;সে দিনটির আমি নাম দিয়েছিলাম – কালোদিন।
কে জানতো!
অমন নির্জন দুপুর বেলায় সতীত্বে আমার লেপ্টে রবে কলঙ্ক -চিরকাল।
কি লজ্জা!কি লজ্জা!
এ সমাজে মুখ দেখানো অনেকটা দায় ছিলো
মুক্ত প্রকৃতি; আলো-বাতাস এসব হলো নিষিদ্ধ
এরপর থেকে গুটিয়ে রেখেছিলাম অন্ধকারে নিজেকে – বদ্ধঘরে নির্জনে।
কোনদিন ঠিক আর আলো দেখা হয়নি আমার!
যেতে যেতে একটা গোপন কথা বলি তোমায় –
এমন বীভৎস অন্ধকারেও আমি একা ছিলাম না গো
কলঙ্ক মাথায় নিয়েও অভিশাপের বীজ বুনেছিলাম,
রেখেছিলাম আড়াল করে বিদঘুটে অন্ধকারে ওদের।
দু’টো চারাগাছ এখনো জীবন্ত সজীব – ওরা নিষ্পাপ!
পৃ্থিবী প্রস্থানের মাহেন্দ্রক্ষণে –
যেতে যেতে ভেঙ্গে দিয়ে যাবো অমাবস্যার প্রাচীর
তুমি শুধু সোয়া কেজি জ্যোৎস্না ছড়িয়ে দিয়ো – আমার নামে;
ও’রা যেন আলো মেখে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারে
এ পৃথিবীর স্বচ্ছ আলোয় বেড়ে উঠতে পারে।

Add to favorites
1,268 views